অনলাইন ডস্কে : গাজীপুরের শ্রীপুরে মাকে মারধরের অভিযোগে এক যুবককে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রেখে ‘শাস্তি’ দিয়েছে এলাকাবাসী। তার পাশে দুটি ফেস্টুনে লেখা ছিল ‘মা মারার শাস্তি’ এবং ‘বাপ-মায়ের গায়ে হাত তোলায় এই শাস্তি’। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ওই যুবকের নাম মো. খলিল (৩২)। তিনি ওই এলাকার মো. নুরুদ্দীনের ছেলে। খলিল মাদকাসক্ত বলে তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খলিল দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। নেশার টাকার জন্য তিনি (খলিল) বিভিন্ন সময় মা-বাবার ওপর হাত তুলতেন।
প্রতিবেশীদের ভাষ্য, শনিবার সকালে মাদক কেনার টাকা চাইলে খলিলের মা তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে খলিল প্রথমে ইট দিয়ে এবং পরে লাঠি দিয়ে মাকে আঘাত করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রতিবেশীরা জড়ো হয়।
তাদের দাবি, এর আগেও একাধিকবার গ্রাম্য সালিসে খলিলকে সতর্ক করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি কোনোভাবেই নিজেকে সংশোধন করেননি।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, ঘটনার পর খলিলের মা নিজেই ছেলেকে শাস্তি দেওয়ার জন্য এলাকাবাসীর সহায়তা চান। তাকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে মাটিতে পুঁতে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, খলিলের মা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং পুরো ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর খলিল নিজে মাটি সরিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আবার ধরে রাখা হয়।
খলিলের মা খোদেজা খাতুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ছেলে মাদকাসক্ত।তার নির্যাতনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আমি হার্টের রোগে আক্রান্ত। এ অবস্থায় আজ সকালে ছেলে আমাকে মারধর করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ওকে (খলিল) শাসন করার আর কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তাই লোকজনকে বলেছি, যেন সে ভয় পায়।’
খলিলের বাবা মো. নুরুদ্দীন জানান, ছেলের কারণে পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি চলছে। তিনি নিজেও কয়েকবার মারধরের শিকার হয়েছেন। এসব কারণে আলাদা হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা তোতা মিয়া বলেন, ‘কেবল ভয় দেখানোর জন্য খলিলকে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল। এটা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে করা হয়নি। এ ছাড়া তাকে কিছুক্ষণ পর সেখানে থেকে তুলে ফেলা হয়েছে। পরে তার পরিবারের লোকজন আবার আটকে রাখে। স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সবাই মিলে এই কাজ করেছে।’
অভিযুক্ত খলিল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির আহমেদ জানান, তিনি এ ঘটনার কথা শুনেছেন। তবে কোনো অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন ওসি।