নিজস্ব প্রতিবেদক:বরিশাল নগরীর পলাশপুর ও রসুলপুর এলাকাগুলো যেন মা*দ*কের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাঝে মাঝে অভিযান চালানোর পরও থামছে না মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য। ই*য়া*বা, গাঁ*জার মতো মরণঘাতী মা*দকদ্রব্য এখন হাতের নাগালে পাওয়া যাচ্ছে মহল্লা গুলোর অলিগলিতে। এতে করে যুবসমাজ নেশার জালে জড়িয়ে ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, আর এলাকাবাসী দিনকে দিন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তার গোপন মদদে মাদক ব্যবসায়ীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। ফলে যখনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালায়, তখনই তারা আগেভাগে খবর পেয়ে যায় এবং গা ঢাকা দেয়। ফলে মূল অপরাধীরা অধরা থেকে যায় এবং বারবার এলাকায় ফিরে এসে আগের চেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
বিশ্বস্ত সূত্রের জানা গেছে, মহম্মদপুর এলাকার কুখ্যাত মা*দক ব্যবসায়ী লাখাই, রসুলপুরের টিএনটি কালু, পলাশপুর ১ নম্বর এলাকার রিয়াজ, ২ নম্বর এলাকার পেডা শাহীন, ৩ নম্বরের জসিম, ৫ নম্বরের ডিজে, ৬ নম্বরের বডি মিরাজ, ৭ নম্বরের রিপন-সহ একাধিক চিহ্নিত ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এরা প্রত্যেকেই এলাকার তরুণদের মাদকের নেশায় আসক্ত করে ভয়ঙ্কর অপরাধ জগতে টেনে নিচ্ছে। এদের কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত মাদকের কবলে পড়ে ভবিষ্যৎ হারাচ্ছে।
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, যদি দ্রুত এই ভয়ঙ্কর মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করে কঠিন শাস্তি না দেওয়া হয়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তারা দাবি জানায়, শুধু লোক দেখানো অভিযান নয়, বরং মাদক ব্যবসার মূলহোতাদের চিহ্নিত করে স্থায়ীভাবে নির্মূল করতে হবে। এলাকাবাসীর বক্তব্য—মাদকের শেকড় উপড়ে ফেলার জন্য প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে এবং কোনো রকম গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, “আমরা মাদক নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি এবং চিহ্নিত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। কোনো অপরাধী রেহাই পাবে না।”
তবে এলাকাবাসী পুলিশের এই প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখতে পারছে না। তাদের প্রশ্ন, প্রশাসনের নজরদারির মধ্যেই কেন দিনের পর দিন মাদকের ব্যবসা চলছে? যদি সত্যিই পুলিশ কার্যকর পদক্ষেপ নিত, তাহলে এই মাদক ব্যবসা এতদিন টিকে থাকত না।
এলাকাবাসী দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, যদি দ্রুত মাদক কারবারিদের আইনের আওতায় না আনা হয়, তাহলে তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। তারা চায়, বরিশাল নগরীকে মাদকমুক্ত করতে প্রশাসন এবার সত্যিকারের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুক।