নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংসদ বাকসু (ব্রজমোহন ইউনির্ভাসিটি কলেজ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন) এর নাম ব্যবহার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন কলেজটির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের ছাত্র সংসদের প্রস্তাবিত নাম বাকসু ( বরিশাল ইউনির্ভাসিটি সেন্ট্রাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন) রাখার উদ্যোগ নিয়েছে এ তথ্য জানাজানির পর শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) আলী আজগর ফকির।
তিনি বলেন,“বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও মুক্তচিন্তার প্রতীক হলো ব্রজমোহন কলেজ। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ছাত্র সংসদ দক্ষিণ বাংলার গণআন্দোলনের অন্যতম পথপ্রদর্শক ছিল। বরিশাল বিভাগ ঘোষণা, পদ্মা সেতু নির্মাণের দাবি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ বহু গণমুখী আন্দোলনের সূচনা হয়েছে বিএম কলেজ ছাত্র সংসদ (বাকসু’র) হাত ধরে। তিনি আরও বলেন, “বাকসু নামটি এখন শুধু একটি সংগঠনের নাম নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক পরিচয়, রাজনৈতিক ধারা ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার।
অথচ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ছাত্র সংসদের জন্য একই নাম প্রস্তাব করে বিভ্রান্তি ও উত্তেজনার সৃষ্টি করছে। আলী আজগর ফকির উদাহরণ টেনে বলেন,“জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সংক্ষিপ্ত নাম জাকসু। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জকসু রাখা হয়েছে যাতে কোনো বিভ্রান্তি না থাকে। একইভাবে ব্রজমোহন কলেজের ‘বাকসু’ নামের স্বাতন্ত্র্য রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়েরও আলাদা নাম নির্ধারণ করা উচিত। তিনি আইনি দিক তুলে ধরে বলেন, “কোনো নাম যদি দীর্ঘকাল ধরে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থেকে সমাজে স্বীকৃতি পায়, তবে তা প্রথাগত অধিকারের আওতাভুক্ত হয়।
ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক স্বীকৃতি ও দীর্ঘদিনের ব্যবহার এই চারটি মানদণ্ডে ‘বাকসু’ নামের আইনি ও নৈতিক অধিকার ব্রজমোহন কলেজের। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান, বরিশাল অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের আবেগ ও ঐতিহ্য বিবেচনা করে ‘বাকসু’ নামটি শুধুমাত্র ব্রজমোহন কলেজের ছাত্র সংসদের ঐতিহ্য হিসেবেই সংরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। অন্যথায়, সাবেক বাকসু নেতৃবৃন্দ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন বলে সতর্ক করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বাকসুর সাবেক জিএস আবু জাফর সিকদার বাদল, সাবেক এজিএস মনজুরুল হক জিসান, সাবেক ছাত্র মিলনায়তন সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিল্টন, সাবেক ম্যাগাজিন সম্পাদক নাজমুল হাসান ছবির, বর্তমান শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও সাব্বির হোসেন সোহাগসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন ।