• ৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২২শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালীতে চুরি করতে সাবমেরিন ক্যাবল কেটেছে দুষ্কৃতকারীরা, আটক ২

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত জুন ৩০, ২০২৫, ২৩:০৯ অপরাহ্ণ
পটুয়াখালীতে চুরি করতে সাবমেরিন ক্যাবল কেটেছে দুষ্কৃতকারীরা, আটক ২
সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক : সংঘবদ্ধ একটি চক্র সাবমেরিন ক্যাবল চুরি করার উদ্দেশ্যে কেটে ফেলায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে উপজেলা সদরসহ চারটি ইউনিয়নের অন্তত ২৫ হাজারের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এলাকাবাসী দুইজনকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন।

ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাত ১১টার দিকে। এঘটনায় রোববার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাঙ্গাবালী সাব জোনাল অফিসের এজিএম প্রকৌশলী কাওসার আহম্মেদ।

তিনি জানান, ভোলা থেকে মুজিবনগর উপকেন্দ্র দিয়ে বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেতুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে রাঙ্গাবালী উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ হতো। গহিনখালী সংলগ্ন বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর অংশে রাতের আঁধারে কেটে ফেলা হয় সেই সাবমেরিন ক্যাবলের দুইটি ফেইজ। তিনটি ফেইজ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। অতিরিক্ত আরও একটি ফেইজ থাকে, যাতে কোন ক্রুটি হলে বিদ্যুৎ চালু রাখা যায়। কিন্তু একটি সচল ফেইজ ও অতিরিক্ত ফেইজ কেটে ফেলেছে দুষ্কৃতকারীরা। এ কারণে বিদ্যুৎ চালু করা যাচ্ছে না।

ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাঙ্গাবালী সদর, ছোটবাইশদিয়া, বড়বাইশদিয়া ও মৌডুবি ইউনিয়ন। বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় মানুষ।

জানা গেছে, গলাচিপার পানপট্টি এলাকা থেকে শনিবার বিকেল ৪টায় ট্রলারযোগে রওনা দেন চক্রের সদস্যরা। ট্রলারটি ছিল জসিম মৃধার মালিকানাধীন। রাত ৮টার দিকে তারা গহিনখালী এলাকায় পৌঁছে সাবমেরিন ক্যাবল কাটার কাজ শুরু করেন। ক্যাবেল কাটার সময় বিকট শব্দ শুনে চক্রের ছয় সদস্য পালিয়ে যায়। তবে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে যায় দুইজন।

আটককৃতরা হলেন, গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের গোবতের হাওলা গ্রামের বাদশা মৃধার ছেলে জসিম মৃধা (৩৫) এবং রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চররুস্তুম গ্রামের রাজা মৃধার ছেলে জুয়েল মৃধা (২৫)। সম্পর্কে তারা দুইজন চাচাতো ভাই।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, ভোলা থেকে ছয় সদস্যের চক্রটি এসে তাদের ট্রলার ভাড়া করেন। সাবমেরিন ক্যাবল কেটে নিতে তারা প্রায় তিন লাখ টাকার সরঞ্জাম কিনেছিলেন। ছয়জন সদস্যের বাড়ি ভোলা জেলায় হলেও তাদের নাম-পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমারৎ হোসেন বলেন, আটক দুইজন এবং ঘটনায় জড়িত চক্রের মূল সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) আবুল কাশেম বলেন, আমিসহ আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখনি জানানো সম্ভব নয়। দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, সোমবার রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সাবমেরিন ক্যাবেলের কাটা অংশ জোড়া দেয়ার জন্য কীটসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে কাল একটি টিম আসবে।