অনলাইন ডেক্স : ১০০ বন্দি স্থানান্তরের মাধ্যমে দীর্ঘ চৌদ্দ বছরের নির্মাণ কাজ শেষে আজ শনিবার (১ নভেম্বর) চালু হলো খুলনার নতুন কারাগার। তবে জনবল—সংকটের কারণে আপাতত সাজাপ্রাপ্ত ১০০ বন্দি নিয়ে নতুন কারাগারের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। তিনটি প্রিজন ভ্যানে করে পুরাতন কারাগার থেকে সকাল এগারোটার দিকে তাদের স্থানান্তর করা হয়। এ সময় নতুন কারাগারে প্রবেশের আগে বন্দিদের রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
তবে নতুন কারাগার চালু হলেও পুরোনো কারাগারের কার্যক্রমও চলবে বলে জানা গেছে। নতুন কারাগারে খুলনার নয়টি উপজেলার বন্দি এবং পুরোনো কারাগারে খুলনা মহানগরীর বন্দিদের রাখা হবে। সে তুলনায় জেলার বন্দিরা অনেক স্বস্তিতে থাকবে।
গণপূর্ত বিভাগ থেকে জানা গেছে, খুলনার সিটি (রূপসা সেতু) বাইপাস সড়কে প্রায় ৩০ একর জমির ওপর নতুন কারাগার নির্মাণ প্রকল্প শুরু হয় ২০১১ সালে। চৌদ্দ বছর পর সেই কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে আটবার প্রকল্পের সময় বেড়েছে, দুই দফা সংশোধনের পর ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২৮৮ কোটি টাকা।
এর আগে কারাগারটি ঘুরে দেখা গেছে, নতুন কমপ্লেক্সটি একটি আধুনিক আবাসিক এলাকার মতো দেখতে, যেখানে টাইলসযুক্ত হাঁটার পথ, সাজানো বাগান ও নতুন রং করা ভবন রয়েছে। এখানে মোট ৫২টি ভবন নির্মিত হয়েছে।
নতুন কারাগারটিতে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য আলাদা ইউনিট, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বিশেষ ব্যারাক এবং নারী বন্দিদের জন্য হাসপাতাল, কাজের জায়গা ও একটি মোটিভেশন কেন্দ্রসহ আলাদা অংশ রয়েছে। এ ছাড়া, এখানে ৫০ শয্যার একটি সাধারণ হাসপাতাল, কারা কর্মীদের সন্তানদের জন্য একটি স্কুল, একটি গ্রন্থাগার, ডাইনিং হল, সেলুন ও লন্ড্রি সুবিধাও রয়েছে। শিশুসহ নারী বন্দিদের জন্য একটি বিশেষ ওয়ার্ড ও ডে—কেয়ার সেন্টার রয়েছে, যেখানে শিক্ষা ও বিনোদনের ব্যবস্থা আছে। পুরুষ ও মহিলা উভয় বন্দির জন্যই আলাদা নামাজের ঘর, কাজের জায়গা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের স্থান রয়েছে।
খুলনার জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, কারাগার পরিচালনার জন্য ৬০০ জনবলের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ২০৮ জনবল রয়েছে। নতুন করে ৪৪ জনকে পদায়ন করা হয়েছে। আপাতত এই জনবল দিয়েই দুটি কারাগারের কাজ চালিয়ে নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১৪৪ কোটি টাকার প্রাথমিক বাজেট এবং ২০১৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময়সীমা দিয়ে খুলনায় কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন করে। এরপর একাধিকবার সময়সীমা বাড়ানো এবং দু’বার বাজেট সংশোধনের পর বর্তমানে প্রকল্পের খরচ ২৮৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। তারপরও ঠিকাদারের গড়িমসির কারণে এখনও শতভাগ কাজ শেষ হয়নি।