নিজস্ব প্রতিবেদক : শারদীয় দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা সৈকতে বিপুলসংখ্যক পর্যটক ও দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই পর্যটকেরা সৈকতে ভিড় করছেন। ইতিমধ্যে এখানকার আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোর অধিকাংশই আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
সরেজমিনে আজ সকালে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে সৈকতে বিপুলসংখ্যক পর্যটকদের আনাগোনা। অনেকে সমুদ্রস্নান করছেন, অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠেছেন। আগামী ৪ অক্টোবর (শনিবার) পর্যন্ত পূজা ও সাপ্তাহিক ছুটি। এই চার দিনের লম্বা ছুটি ঘিরে পর্যটননির্ভর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে এবং পরিচ্ছন্নতার কাজ সম্পন্ন করেছে।
২৯ সেপ্টেম্বর থেকেই শারদীয় উৎসব ঘিরে পর্যটকেরা কুয়াকাটা সৈকতে আসতে শুরু করেছেন। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এবার পূজার ছুটিতে লক্ষাধিক লোকসমাগম হবে। লম্বা ছুটি ঘিরে এখনো বহু পর্যটক বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করছেন। দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীরা।
আবাসিক হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটায় ছোট-বড় মিলিয়ে আড়াই শতাধিক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে।
প্রথম শ্রেণির হোটেলগুলোর বেশির ভাগেই শতভাগ আগাম বুকিং হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির হোটেলগুলোতেও ৫০-৬০ ভাগ কক্ষ বুকিং হয়েছে, যা শতভাগে পৌঁছাবে বলে তারা আশাবাদী।
আবাসিক হোটেল সৈকতের ম্যানেজার রাজিব হোসেন জানান, তাঁদের ৭০টি কক্ষ ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বুকিং রয়েছে। পর্যটন করপোরেশনের মোটেল ইয়ুথ ইন ও হলিডে হোমসের ৭৭টি কক্ষের মধ্যে ৯০ ভাগই আগাম বুকিং হয়েছে।
সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলাসের এজিএম আল-আমিন খান উজ্জ্বল জানান, ১ থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁদের রিসোর্ট ও ভিলা শতভাগ বুক হয়েছে।
সাতক্ষীরা থেকে আসা পর্যটক গোপাল কর্মকার বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব উপলক্ষে বন্ধুদের সঙ্গে এখানে এসেছি। অনেক লোকের আগমনে কুয়াকাটা সৈকত নতুন রূপে সেজেছে। অনেক আনন্দ করেছি।’
এদিকে বিপুলসংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমন ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ, মহিপুর থানার পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সদস্যদের নজরদারিতে রয়েছে সৈকত এলাকা। আগতরা যাতে নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন কর্তৃপক্ষ।
টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান জানান, পূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটায় প্রচুরসংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে। আগত পর্যটক দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ তারা যেন নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারে, সে জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ দর্শনীয় স্পটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ টহল টিম কাজ করছে।
কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসিন সাদেক বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় পৌর কর্তৃপক্ষ, মহিপুর থানার পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সড়ক-মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্টের মাধ্যমে নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে।