নিজস্ব প্রতিবেদক : আবহাওয়ার তারতম্যে ঝালকাঠিতে ঝরে পড়ছে পেয়ারার ফুল-কুড়ি। এতে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা কৃষকের। এ অবস্থায় সেচসহ বিভিন্ন ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ কৃষি বিভাগের।
দেশি জাতের পেয়ারা চাষে ঝালকাঠির খ্যাতি দেশজুড়ে। অগণিত কৃষক পরিবারের প্রধান আয়ের মাধ্যমও পেয়ারা চাষ। মৌসুমের শুরুতে গাছে গাছে ফুল-কুড়িতে ছেয়ে গেলেও লাগাতার তীব্র খরায় তা ঝরে পড়ছে।
শুকিয়ে যাচ্ছে থোকায় থোকায় ফুল-কুড়ি। রোদে শুকিয়ে পেয়ারার আকার যেমন ছোট হয়েছে তেমনি ধরেছে কালো কালো ছিট পড়া রোগ। এদিকে তীব্র খরার পর সম্প্রতি অতিবৃষ্টিতে দ্বিতীয় দফায় নেমেছে বিপর্যয়। ভারি বৃষ্টিতে ঝরে পড়েছে পেয়ারার গুটি। ধরেছে পঁচনসহ রোগ ব্যাধিও। তাই ফলন নিয়ে শঙ্কায় পেয়ারা উদ্যোক্তারা। যারা ঋণ করে পুঁজি সংগ্রহ করেছেন তাদের যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।
সদর উপজেলার ভীমরুলি গ্রামের পেয়ারা বাগান মালিক অসীম হালদার বলেন, ‘দিন দিন আবহাওয়া বদলে যাচ্ছে। এপ্রিলের শুরুতে তীব্র রোদ আর গরম শুরু হচ্ছে। আগে এ সময়টায় তাপমাত্রা কম ছিলে। মাঝেমধ্যে অল্প বৃষ্টিও হতো। কিন্তু ৫-৭ বছর ধরে আবহাওয়া বদলে যাচ্ছে। আবার যখন বৃষ্টি ঝরছে, তাও লাগামহীনভাবে অতিবৃষ্টি। ফলে চলতি বছর তীব্র রোদের কবলে একবার, পরে অতিবৃষ্টির কবলে আরেকবার পেয়ারার ফল ঝরে গেছে।
পেয়ারার স্থানীয় আড়তদার মরু হালদার বলেন, ‘চলতি বছর ফলের আকার যেমনই ছোট হয়েছে; তেমনই ছিটপড়াসহ বিভিন্ন রোগ ধরেছে। ফলের চেহারা ও আকার দেখতে খারাপ দেখাচ্ছে। আর এ কারণে ঢাকা চট্টগ্রামসহ বড় বড় জায়গার পাইকররা ফল কিনতে আগ্রহ হারাবে এবং দামও কম পাওয়া যাবে।’
এ অবস্থায় গাছের গোড়ায় বেশি করে সেচ এবং বিভিন্ন ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ কৃষি বিভাগের। ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ঋতুচক্রের স্বাভাবিক অবস্থারও পরিবর্তন ঘটছে। অসময়ে বৃষ্টি কিংবা টানা দাবদাহ হচ্ছে। এ অবস্থায় গাছের গোড়ায় বেশি করে সেচ এবং ছত্রাক নাশক স্প্রে করাসহ পেয়ারা উদ্যোক্তাদের নানারকম পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, জেলার ৫৬২ হেক্টর জমিতে পেয়ারার বাগান রয়েছে। আর বাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার।